মাইক্রোকরন্ট্রোলার:
সিঙ্গেল চিপ মাইক্রোকম্পিউটারকে মাইক্রোকন্ট্রোলার বলা হয়
। এতে একটি চিপের মধ্যেই নির্দিষ্ট পরিমান RAM,ROM, EEPROM, ALU, Timer ,
Counter, I/O port ইমবেডেড অবস্থায় থাকে । তাই মাইক্রোকন্ট্রোলার
মাইক্রোকম্পিউটারের চেয়েও দ্রুত কাজ সম্পাদন করতে পারে। এতে টাইমিং এবং
কন্ট্রোল ইউনিট যুক্ত থাকায় এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের মেশিনকে সুক্ষ ও
নির্ভুলভাবে নিয়ন্ত্রন করা যায়।
মাইক্রোকন্ট্রোলার
মাইক্রোপ্রসেসর , মেমরি, কন্ট্রোল ইউনিট ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত। যদি
মাইক্রোপ্রসেসর মানুষের মস্তিস্ক হয় তবে মাইক্রোকন্ট্রোলারকে একজন
পূর্ণাঙ্গ মানুষের সাথে তুলনা করা চলে । মানুষ যেমন তার চিন্তা চেতনা এবং
বুদ্ধিমত্তার দ্বারা পরিপার্শের যে কোন পরিবর্তনে সাড়া প্রদান করে তার
কর্মকান্ডকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ঠিক তেমনি, মাইক্রোকন্ট্রোলারের ইনপুট
পোর্টে বিভিন্ন ধরণের সেন্সর ব্যবহারের মাধ্যমে পরিপার্শের বিভিন্ন
পরিবর্তন থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে সে অনুযায়ী আউটপুট পরিবর্তণের মাধ্যমে
সাড়া প্রদান করতে পারে। মাইক্রোকন্ট্রোলার সম্পূর্ণরূপে প্রোগ্রামেবল
হাওয়ায় কোন সার্কিটের হার্ডওয়্যার পরিবর্তন না করেই শুধুমাত্র
প্রোগ্রাম উন্নত করার মাধ্যমে সার্কিটের কার্যপরিধী ও কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি
করা সম্ভব হয়।
মাইক্রোকরন্ট্রোলারের ব্যবহারিক ক্ষেত্র :
১৯৭১ সালে ইন্টেল-4004 ,4 বিট প্রসেসর এর মাধ্যমে সূচনা হয় মাইক্রোকন্ট্রোলারের ইতিহাস। পরবর্তী কালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন চাহিদার পূর্ণতা দানের লক্ষে এবং ইলেকট্রনিক্সকে আরো সমৃদ্ধ করার লক্ষে নতুন নতুন টেকনোলজির 4,8,16 এবং 32 source: বিট মাইক্রোকন্ট্রোলার তৈরি করা হয়।যা ইলেকট্রনিক্স কন্ট্রোল সিস্টেমকে অত্যাধুনিক করার পাশাপাশি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিয়ে আসে অভাবনীয় পরিবর্তন ।সৃষ্টি হয় নতুন নতুন শিল্প ক্ষেত্র।আজও এর উন্নয়ন গতি থেমে নেই।সাধারণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল কন্ট্রোল সিস্টেম থেকে শুরু করে জটিল ও স্পর্শকাতর ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ন্ত্রণ এমনকি মিসাইল গাইডেন্স হিসেবেও এর ব্যবহার লক্ষনীয়।বিভিন্ন শিল্পকারখানার সুক্ষ যন্ত্রাংশের চলাচল গতির নিয়ন্ত্রণ,তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ,পানির লেভেল নির্ধারণ ,মটর এবং বয়লারের টাইমিং নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজে মাইক্রোকন্টোলার দক্ষতার সাথে ব্যবহার করার মাধ্যমে যেমন শিল্পক্ষেত্রে গতি এবং শৃঙ্খলা এসেছে তেমনি মানুষের কর্মকান্ডের পরিধীকে সীমিত করেছে।মানুষের জীবনে এসেছে স্বস্তি। মানুষ হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পরিবর্তে আজ বিনোদনের জন্য যথেষ্ট সময় পাচ্ছে।শুধু তাই নয় গৃহ সামগ্রী ও চিত্ত বিনোদন সামগ্রীতেও ইলেকট্রনিক্স কন্ট্রোল সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোকন্ট্রোলারের ব্যবহার অভাবনীয় সফলতা এনেছে।
A/D কনভার্টার, D/A কনভার্টার, টেলিফোন, রিমোট কন্ট্রোল, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন . লাইটিং কন্ট্রোল, ডিজিটাল ডিসপ্লে কন্ট্রোল, ট্রাফিক সিগন্যাল কন্ট্রোল, ওয়েভ জেনারেশন, কলিং বেল, অটোমেটিক ডোর কন্ট্রোল , লিফট কন্ট্রোল ইত্যাদিতে মাইক্রোকন্ট্রোলারের ব্যবহার যেমন কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি করেছে পাশাপাশি মানুষের জীবনযাত্রার মানও বৃদ্ধি করেছে অনেক গুণ।
সিঙ্গেল চিপ এবং দামে সস্তা হওয়ায় মাইক্রোকন্ট্রোলার সিকিওরিটি সিস্টেম সহ যে কোন ধরণের কন্ট্রোলিং সিস্টেমে ব্যবহার করা যায়।
মাইক্রোকন্ট্রোলারের কল্যানে আজ রোবটিক্স এবং অটোমেশন শিল্পে যেমন উন্নতি হচ্ছে ,হয়তবা এমন দিন আর বেশি দেরি নেই যখন শিল্পক্ষেত্রে আর কোনো কিছুই মানুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না।
মাইক্রোকন্ট্রোলার শেখার জন্য খুব বেশি কিছু নয় ইলেকট্রোনিক্স এবং প্রোগ্রামিং এর উপর সাধারণ ধারণা আর ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট । source:
0 comments:
Post a Comment